নেত্রকোনা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব কারণে হতে পারে হঠাৎ মৃত্যু

  • আপডেট : ০৫:১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১২১

হার্ট অ্যাটাক এক নীরব ঘাতক। যে কেউ যে কোনো সময় এর শিকার হতে পারে। অ্যারিদমিয়া : এতে হার্টের সংকোচন ও প্রসারণ অনিয়ন্ত্রিত হয় এবং হঠাৎ করেই হার্ট বিট অনেক বেড়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাক : এইচসিএম হাইপার ট্রফিক কার্ডিও মায়োপ্যাথি অর্থাৎ কোনো কারণে হার্ট বড় হয়ে গেলে।

হার্টের নিজেরই যদি কোনো ইনফেকশন হয়। হার্টের যে চারটি বাল্ব আছে তার মধ্যে বিশেষ করে অ্যায়োর্টিক বাল্ব যদি বেশি সরু হয়ে যায়, পালমোনারি এম্বলিজম যদি হয়।,

হৃদরোগ ছাড়া আরও কিছু কারণে হঠাৎ মৃত্যু হতে পারে। যেমন- মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হার্টের বৃহত্তর রক্তনালি যদি ছিঁড়ে যায় বা ফেটে যায় এবং ঘাড় মটকে গেলে।,

ওপরে উল্লিখিত রোগগুলো সাধারণত পূর্বাভাস ছাড়া সংঘটিত হয়।

কোনো রোগী যে কোনো রোগের কারণেই মৃত্যুবরণ করুক না কেন, চিকিৎসককে লিখতে হয় কার্ডিওরেস্পিরেটরি ফেইলিউর সেকেন্ডারি টু- যে রোগে মৃত্যু ঘটেছে সেই রোগের নাম। এ রোগে কে কখন কীভাবে আক্রান্ত হবে কেউই কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। কাজেই যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে, ডায়াবেটিস আছে, ধূমপান, মদ্যপান, উচ্চমাত্রার কলেস্টেরল যদি রক্তে থাকে, যদি কেউ স্থূলতায় আক্রান্ত থাকেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে এগুলো অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ এসব ব্যাপারে সাবধান হলে হয়তো হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কিছুটা কমানো সম্ভব। এখন পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগাম বার্তা দেয়ার কোনো কৌশল কেউ উদ্ভাবন করতে পারেননি, তবে যেহেতু চেষ্টা চলছে হয়তো সফলতাও একদিন আসবে।,

হার্ট অ্যাটাক হলে সবাই যে মৃত্যুবরণ করে তা নয়। রোগ নির্ণয়পূর্বক দ্রুত চিকিৎসা করা গেলে বর্তমান যুগের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা সম্ভব বলেই অভিজ্ঞজনরা মনে করেন।,

যারা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তারা সবসময় হাতের নাগালে এমন কি রাস্তায় বের হলেও পকেটে জিটিএন (সাব লিংগুয়াল গ্লিসারিন ট্রাই নাইট্রেট) গ্যাস রাখবেন। কোনো কারণে যে কোনো সময় যদি বুকব্যথা শুরু হয় তখন দুই চাপ জিহ্বার নিচে দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখবেন। সাধারণত ২-৩ মিনিটের মধ্যেই উপসর্গ চলে যায়। যদি উপশম না হয় তবে ধরে নেবেন সম্ভবত আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। নিকটস্থ ক্লিনিক বা হাসপাতালে দ্রুত চলে যেতে হবে এবং সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও একা না গিয়ে কাউকে সঙ্গে নেয়াই বুদ্ধিমানের পরিচায়ক।

যেসব কারণে বুকের ব্যথার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হল- কায়িক পরিশ্রম বেশি করা, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা আবহাওয়া, অতিরিক্ত আহার করা, মাত্রাতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়া, ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা, চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা ইত্যাদি। ‘এসব কারণে বুকের ব্যথা বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা ধারণা করেন অ্যাঞ্জাইনাল পেইন।,

এ ধরনের রোগীদের ৩-৪ ধরনের ওষুধ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা দিয়ে থাকেন এবং বলে দেন চলবে- এ চলা সারা জীবনের জন্য চলা। কোনো কারণে কোনো অবস্থায় ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। ওষুধ চলা অবস্থায়ও সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তখন জরুরিভাবে চিকিৎসকের কাছে যাবেন।,’

হৃদরোগীদের জন্য কিছু উপদেশ বা বিধিনিষেধ :

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। চর্বির উপাদান নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ডায়াবেটিস ও প্রেসার থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন বা নিয়ম করে কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন। তবে ব্যায়াম ততটুকুই করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে যাতে, বুকে যেন ব্যথা না ওঠে। যে কোনো কিছুই স্বাভাবিক পরিমাণের কম হলেও যেমন বিপদ, তেমনি বেশি হলেও সমান বিপদ।,

হার্ট অ্যাটকের পর প্রতিটি সেকেন্ড আপনার বাঁচার সম্ভাবনাকে হত্যা করতে থাকে। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন আর নাই করুন- যে কোনো সময় আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ব্যায়াম এবং হাঁটার উপকারিতা অনেক। প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন অথবা ঘাম ঝরিয়ে হাঁটুন। তা সম্ভব না হলে সপ্তাহে পাঁচ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটুন। সেটিও সম্ভব না হলে এক সপ্তাহের মধ্যে সময় করে নিদেনপক্ষে ১৫০ মিনিট হাঁটুন আপনার সুস্থতার জন্য।,

সুতরাং বিপদ ঠেকাতে প্রেসার-সুগার-ওজন ইত্যাদি সামলে রাখুন। শরীরচর্চা ও স্ট্রেস ম্যানেজ করুন, ‘সঠিক খাবার খান, চলুন চিকিৎসকের কথা মতো।,’

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

যেসব কারণে হতে পারে হঠাৎ মৃত্যু

আপডেট : ০৫:১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হার্ট অ্যাটাক এক নীরব ঘাতক। যে কেউ যে কোনো সময় এর শিকার হতে পারে। অ্যারিদমিয়া : এতে হার্টের সংকোচন ও প্রসারণ অনিয়ন্ত্রিত হয় এবং হঠাৎ করেই হার্ট বিট অনেক বেড়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাক : এইচসিএম হাইপার ট্রফিক কার্ডিও মায়োপ্যাথি অর্থাৎ কোনো কারণে হার্ট বড় হয়ে গেলে।

হার্টের নিজেরই যদি কোনো ইনফেকশন হয়। হার্টের যে চারটি বাল্ব আছে তার মধ্যে বিশেষ করে অ্যায়োর্টিক বাল্ব যদি বেশি সরু হয়ে যায়, পালমোনারি এম্বলিজম যদি হয়।,

হৃদরোগ ছাড়া আরও কিছু কারণে হঠাৎ মৃত্যু হতে পারে। যেমন- মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হার্টের বৃহত্তর রক্তনালি যদি ছিঁড়ে যায় বা ফেটে যায় এবং ঘাড় মটকে গেলে।,

ওপরে উল্লিখিত রোগগুলো সাধারণত পূর্বাভাস ছাড়া সংঘটিত হয়।

কোনো রোগী যে কোনো রোগের কারণেই মৃত্যুবরণ করুক না কেন, চিকিৎসককে লিখতে হয় কার্ডিওরেস্পিরেটরি ফেইলিউর সেকেন্ডারি টু- যে রোগে মৃত্যু ঘটেছে সেই রোগের নাম। এ রোগে কে কখন কীভাবে আক্রান্ত হবে কেউই কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। কাজেই যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে, ডায়াবেটিস আছে, ধূমপান, মদ্যপান, উচ্চমাত্রার কলেস্টেরল যদি রক্তে থাকে, যদি কেউ স্থূলতায় আক্রান্ত থাকেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে এগুলো অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ এসব ব্যাপারে সাবধান হলে হয়তো হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কিছুটা কমানো সম্ভব। এখন পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগাম বার্তা দেয়ার কোনো কৌশল কেউ উদ্ভাবন করতে পারেননি, তবে যেহেতু চেষ্টা চলছে হয়তো সফলতাও একদিন আসবে।,

হার্ট অ্যাটাক হলে সবাই যে মৃত্যুবরণ করে তা নয়। রোগ নির্ণয়পূর্বক দ্রুত চিকিৎসা করা গেলে বর্তমান যুগের আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা সম্ভব বলেই অভিজ্ঞজনরা মনে করেন।,

যারা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তারা সবসময় হাতের নাগালে এমন কি রাস্তায় বের হলেও পকেটে জিটিএন (সাব লিংগুয়াল গ্লিসারিন ট্রাই নাইট্রেট) গ্যাস রাখবেন। কোনো কারণে যে কোনো সময় যদি বুকব্যথা শুরু হয় তখন দুই চাপ জিহ্বার নিচে দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখবেন। সাধারণত ২-৩ মিনিটের মধ্যেই উপসর্গ চলে যায়। যদি উপশম না হয় তবে ধরে নেবেন সম্ভবত আপনার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। নিকটস্থ ক্লিনিক বা হাসপাতালে দ্রুত চলে যেতে হবে এবং সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও একা না গিয়ে কাউকে সঙ্গে নেয়াই বুদ্ধিমানের পরিচায়ক।

যেসব কারণে বুকের ব্যথার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হল- কায়িক পরিশ্রম বেশি করা, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা আবহাওয়া, অতিরিক্ত আহার করা, মাত্রাতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়া, ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা, চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা ইত্যাদি। ‘এসব কারণে বুকের ব্যথা বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা ধারণা করেন অ্যাঞ্জাইনাল পেইন।,

এ ধরনের রোগীদের ৩-৪ ধরনের ওষুধ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা দিয়ে থাকেন এবং বলে দেন চলবে- এ চলা সারা জীবনের জন্য চলা। কোনো কারণে কোনো অবস্থায় ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। ওষুধ চলা অবস্থায়ও সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তখন জরুরিভাবে চিকিৎসকের কাছে যাবেন।,’

হৃদরোগীদের জন্য কিছু উপদেশ বা বিধিনিষেধ :

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। চর্বির উপাদান নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ডায়াবেটিস ও প্রেসার থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন বা নিয়ম করে কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন। তবে ব্যায়াম ততটুকুই করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে যাতে, বুকে যেন ব্যথা না ওঠে। যে কোনো কিছুই স্বাভাবিক পরিমাণের কম হলেও যেমন বিপদ, তেমনি বেশি হলেও সমান বিপদ।,

হার্ট অ্যাটকের পর প্রতিটি সেকেন্ড আপনার বাঁচার সম্ভাবনাকে হত্যা করতে থাকে। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন আর নাই করুন- যে কোনো সময় আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ব্যায়াম এবং হাঁটার উপকারিতা অনেক। প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন অথবা ঘাম ঝরিয়ে হাঁটুন। তা সম্ভব না হলে সপ্তাহে পাঁচ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটুন। সেটিও সম্ভব না হলে এক সপ্তাহের মধ্যে সময় করে নিদেনপক্ষে ১৫০ মিনিট হাঁটুন আপনার সুস্থতার জন্য।,

সুতরাং বিপদ ঠেকাতে প্রেসার-সুগার-ওজন ইত্যাদি সামলে রাখুন। শরীরচর্চা ও স্ট্রেস ম্যানেজ করুন, ‘সঠিক খাবার খান, চলুন চিকিৎসকের কথা মতো।,’

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল